সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

Livetech

D. P. - 560



লিভটেক
যকৃত মানবদেহের মস্তিষ্কের পর দ্বিতীয় বৃহত্তম অঙ্গ। ইহাকে সর্বাধিক কাজের জন্য গ্রন্থি হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। চক্ষু, হৃদয়, মস্তিষ্ক, অস্থিসন্ধি, কিডনি প্রভৃতি অঙ্গের কার্যক্ষমতা ভালো যকৃতের উপর নির্ভরশীল। যকৃত পেটের ডানদিকের ওপরের অংশে অবস্থান করে যাহা পাজরের দ্বারা সুরক্ষিত থাকে। রক্ত প্রবাহের দুটি উৎস আছে, যকৃতের কোষে ইহা হল হেপাটিক ধমনী এবং পোর্টাল শিরা। হেপাটিক ধমনী অক্সিজেন যুক্ত রক্ত সরবরাহ করে। যাহা হার্ট থেকে সঞ্চালিত হয়, যখন পোর্টাল শিরা অন্ত্র এবং অগ্নাশয়ের থেকে পুষ্টি সরবরাহ করে হেপাটিক ধমনী শরীর থেকে হার্টে রক্ত নিয়ে যায়। কিন্তু পোর্টাল শিরা পোষ্টিক নালীর থেকে রাসায়নিক দ্রব্য শুদ্ধিকরণের জন্য যকৃতে প্রবেশ করে এবং রক্তপ্রবাহে মেশে

 যকৃতের কার্যকারিতা 
(1) আমাদের শরীরে পরিপাক তন্ত্র, ত্বক এবং শ্বসনতন্ত্রের মাধ্যমে বিষাক্ত বস্তু শরীরের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে তাহা যকৃত বারংবার রক্ত পরিশুদ্ধ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পরিপাক তন্ত্রে স্থানান্তর করে।
(2) যকৃত পিত্তরস (রাসায়নিক পদার্থ, জল এবং পিত্ত অমলের সংমিশ্রণ) উৎপাদন করে। খাদ্য যখন পাকস্থলী থেকে গ্রহনীতে গিয়ে পৌছায় তখন ইহা খাদ্যের স্নেহ জাতীয় পদার্থকে শোষণ করতে সাহায্য করে এবং তার সাথে স্নেহ জাতীয় পদার্থের মধ্যে দ্রবীভূত ভিটামিনকে (ভিটামিন এ, ডি, ই, কে ) শোষণে সাহায্য করে।
(3) যকৃত তাৎক্ষনিক এনার্জি উৎপাদনের জন্য কার্বোহাইড্রেট কে শর্করায় রূপান্তরিত করে, এবং শর্করাকে গ্লাইকোজনে - (সঞ্চিত শর্করা ) পরিবর্তিত করে। আবার কোনও কারণে রক্তে শর্করার পরিমাণ কমে গেলে তখন পুনরায় গ্লাইকোজেনকে শর্করায় পরিবর্তন করে শরীরের মধ্যে শর্করার ভারসাম্য বজায় রাখে।
(4) যকৃত একমাত্র অঙ্গ যা সহজেই শরীরের মধ্যে নষ্ট হয়ে যাওয়া কোষকে পুনরায় প্রতিস্থাপন করতে পারে।
(5) শরীরের কোন অংশে কেটে গেলে অথবা আঘাতপ্রাপ্ত স্থানে রক্তপাত বন্ধ করবার কাজে যকৃত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
(6) শরীরে প্রবিষ্ট ড্রাগ এবং বিষাক্ত অ্যালকোহলকে বিভিন্ন উৎসেচকের মাধ্যমে প্রশমিত করে এবং বর্জ্য পদার্থকে অন্ত্রে স্থানান্তর করে।
(7) ইহা প্রোটিনের জন্য অ্যামাইনো অ্যাসিড উৎপাদন করে যেমন হরমোন।
(8) যকৃত লোহিত রক্ত কণিকার জন্য লৌহ উৎপাদন এবং সংরক্ষণ করিয়া থাকে।
(9) স্নেহ পদার্থ সংবহনের জন্য স্নেহ জাতীয় পদার্থ এবং অন্যান্য রাসায়নিক দ্রব্য উৎপাদন করে থাকে।
(10) শারীর বৃত্তিয় প্রক্রিয়ার ফলে উৎপন্ন বর্জ্য পদার্থকে ইউরিয়াতে পরিবর্তিত করে, যাহা মুত্রের মাধ্যমে শরীর থেকে বাহির হইয়া যায়।


 যকৃত রোগের লক্ষণ 

1| অ্যাসিডিটির (অম্ল) মাত্রা অধিক পরিমাণে বেড়ে যায় এবং বেশিরভাগ সময়ে পেট ফুলে থাকে।
2| হজমের সমস্যা এবং ক্ষুধামান্দ্য দেখা যায়।
3| বমি ভাব এবং মল ফ্যাকাশে রঙের হয়ে যায়। মলের রঙ কখনো কখনো রক্তাভাব বা আলকাতরার ন্যায় দেখা যায়।
4| মাথার চুল পড়ে যাওয়া এবং অসময়ে চুল পেকে যাওয়া। ত্বক এবং চোখ হলুদ হয়ে যায়।
5| দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি দেখা যায়। কোন কাজে মন বসানো সম্ভব হয় না। ভঙ্গুর মানসিকতার জন্ম হয়।
6| পেটের উপরের দিকে ডানদিকে ব্যাথা অনুভব হয়।
7| প্রস্রাবের রঙ গাঢ় হয়ে যায় এবং অন্ত্রে রক্তপাত হয়।
8| রক্তাল্পতা, রক্তবমি, কালো মল দেখা যায়। শরীর দুর্বল হয়ে যায় ও ওজন হ্রাস পায় এবং যৌন আগ্রহ কমে যায়।
9| রক্তে বিলিরুবিন এর মাত্রা বেড়ে ত্বক হলুদ হয়ে যায়, ইহাকে বলে জন্ডিস।


 যকৃতের গুরুত্বপূর্ণ ব্যাধি 
(1) ফ্যাটি লিভার
অ্যালকোহল জনিত কারণে এবং শরীরের স্নেহ জাতীয় পদার্থ বেড়ে যাওয়ার ফলে যকৃতের কোষ নষ্ট হয়ে যায়, এর ফলে অম্ল বেশি পরিমাণে উৎপাদিত হয়, এর ফলে হজমের সমস্যা এবং ক্ষুধামান্দ্য রোগের জন্ম হয়। ধীরে ধীরে ইহা ক্রনিক আকার ধারণ করে। সিরোসিস, লিভার ট্রান্সপ্লান্ট, লিভার ক্যান্সার রোগের প্রাথমিক অবস্থা হল ফ্যাটি লিভার।

(2) গলস্টোন
পিত্ত নালীর মধ্যে দুষিত খাদ্য একত্রিত হয়ে কোলাংজাইটিস উৎপন্ন হয়। ইহার ফলে গলস্টোন তৈরি হয় ফলে যকৃৎ বিকল হয়ে পড়ে।

(3) সিরোসিস
সিরোসিস যকৃতের একটি প্রধান এবং গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা। সিরোসিস পরবর্তী পর্যায়ে লিভার বিকল এবং লিভার ক্যান্সারের আত্মপ্রকাশ করে। বহুবিধ কারণের মধ্যে প্রধানতঃ- ফ্যাটি লিভার রোগীদের ক্ষেত্রে এর সম্ভাবনা বেশী থাকে। সিরোসিস এর পর্যায়ে যকৃতের কোষ ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে থাকে। ফলে যকৃৎ কলা সংক্রমিত এবং ক্ষতিগ্রস্থ হতে থাকে, যার ফল স্বরূপ 25 বৎসর থেকে 60 বৎসর পর্যন্ত এই রোগে আক্রান্ত হয়ে বেশিরভাগ মানুষ মারা যায়। মহিলাদের মধ্যে এই রোগের সম্ভাবনা দ্বিগুন এবং সাধারণ মানুষের থেকে অ্যালকোহল গ্রহীতাদের ক্ষেত্রে এই রোগের প্রবণতা 30 গুণ বেশী। অ্যাসিডিটি হওয়া, মস্তিষ্ক বিকৃত, মলদ্বার থেকে রক্তপাত, রক্তবমি প্রভৃতি সিরোসিসের লক্ষণ।

(4) হেপাটাইটিস
সাধারণতঃ যকৃতের বৃদ্ধি পাওয়াকে বলা হয় হেপাটাইটিস সংক্রমণ। মানব শরীরের হেপাটাইটিস এ, বি, সি, ডি, ই সংক্রমণ দেখা যায়, ইহাকে জন্ডিস বলা হয়ে থাকে। মানব শরীরে দুষিত খাদ্য, পানীয় জলের অবস্থিত জীবাণু , দুষিত ইঞ্জেকশন এবং সংক্রমনিত রক্ত এই রোগের বিশেষ কারণ। এই রোগের ফলে গ্যাস্টিক আলসার দেখা দিতে পারে। যখন ইহা ক্রনিক অবস্থায় পৌঁছায় তখন সিরোসিস, লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট, লিভার ক্যান্সারের জন্ম হয়ে থাকে। সমগ্র বিশ্বব্যাপী প্রায় 200 মিলিয়ান মানুষ এই রোগের দ্বারা আক্রান্ত।

(5) লিভার ক্যান্সার
সমগ্র বিশ্বের ক্যান্সারের দ্বারা মৃত্যুর মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে লিভার ক্যান্সার। অ্যালকোহল, ফ্যাটি লিভার, হেপাটাইটিস বি ও সি, বিষাক্ত খাদ্য দ্রব্য, লিভার টিউমার, সিরোসিস প্রভৃতি হল লিভার ক্যান্সারের প্রধান কারণ। কখোনো কখোনো লিভার ক্যান্সার আগেই ধরা পড়ে। আবার বেশিরভাগ সময়েই ধরা পড়ে না। এমতাবস্থায় সর্বশেষ সমাধান হল লিভার ট্রান্সপ্লান্ট, যা দুঃস্প্রাপ্য বললেও কম বলা হয়।

 লিভটেক 
লিভটেক হল একটি শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ আয়ুর্বেদিক ঔষধ। যেটা আপনার যকৃৎকে সুরক্ষিত ও পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করে। ইহা চিকিৎসাগত ও গবেষণা দ্বারা আবিষ্কৃত একটি ভেষজ ঔষধ যা আপনার কলাকে সুস্থ ও স্বাভাবিক করে তোলে। ইহার মধ্যে আছে - কুরচি,কুটকি,ভুই আমলা, কালমেঘ এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ভেষজ যাহা আপনাকে আপনার যকৃৎ ঘটিত রোগের হাত থেকে রক্ষা করে এবং রোগ নির্মূল করে। লিভার ক্যান্সার, লিভার ট্রান্সপ্লান্ট এর মতো গুরুত্বপূর্ণ বিপদের থেকে আপনার যকৃৎকে রক্ষা করার ক্ষমতা রাখে। আপনি কিছু সময় ধরে লিভটেক নিয়মিত সেবন করলে আপনার যকৃৎ সুস্থ, সবল এবং সতেজ হয়ে উঠবে।


উপকারীতা
+ লিভটেক জন্ডিস, হেপাটাইটিস এর মতো গুরুত্বপূর্ণ রোগের প্রতিরোধ ঔষধ।
+ লিভটেক যকৃতের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে, খাদ্যবস্ত হজমে সাহায্য করে এবং পাকস্থলীর অম্ল  (অ্যাসিডিটি) প্রশমিত করে।
+  লিভটেক ফ্যাটি লিভার, সিরোসিস, লিভার ক্যান্সার জাতীয় জটিল রোগের কারণে যকৃতের নষ্ট হয়ে যাওয়া কোষগুলিকে পুনরায় সক্রিয় করতে সহযোগীতা করে থাকে।
+  লিভটেক নিয়মিত ব্যবহারের ফলে যকৃতের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ফলে শরীরের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলি সুস্থ এবং স্বাভাবিক থাকে।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

Sea Buckthorn

  D. P. - 800   সীবকথর্ন  থইরয়েড - সীবাকথর্ন থাইরয়েডের যেকোন সমস্যায় খুব ভালো কাজ দেয়। থাইরয়েড বেশি বা কম থাকলে সেটি নিয়ন্ত্রনের জন্য সীবাকথর্ন অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। লিভার - সীবাকথর্ন লিভারের যেকোন সমস্যায় অত্যন্ত উপকারী। সীবাকথর্নে থাকা অর্গানিক অ্যাসিড  (ম্যালিক অ্যাসিড, অক্সালিক অ্যাসিড) লিভারকে টক্সিন, ক্ষতিকারক কেমিক্যালস ও অ্যান্টবায়োটিকের কুপ্রভাব থেকে রক্ষা করে এবং সুস্থ ও সবল লিভার তৈরিতেসাহায্য করে। হার্ট - সীবাকথর্ন হার্টের যেকোন সমস্যায় খুব উপকারী। এটি রক্তের শর্করা কমাতে এবং ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। নার্ভ - এটি নার্ভের সমস্যায় খুব ভালো কাজ করে এবং ব্রেনের কার্যকারিতা বৃদ্ধিতে অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। প্রোষ্টেট - সীবাকথর্ন প্রোষ্টেট ও কোলন হেলথের সমস্যায় খুব কার্যকরী। ওবেসিটি - সীবাকথর্নের মধ্যে থাকা ওমেগা- 7 অতিরিক্ত মেদ কমাতে ও রোগা হতে সাহায্য করে। পাকস্থলী সংক্রান্ত - সীবাকথর্ন গ্যাসট্রিকের সমস্যায় অত্যন্ত উপকারী। এটি হজমের কোন সমস্যায় এবং হজম শক্তি বৃদ্ধিতে খুব ভালো কাজ করে। আলসার - সীবাকথর্ন আলসার নিরাময়ে দারুন কার্যকরী। শ্বাসপ্রশ্বাস ...